লালমাটির দেশের এই জাগ্রত কালী মায়ের মন্দির ৩০০ বছরের পুরোনো !

 


স্পেশাল রিপোর্ট ওয়েব ডেস্ক,  লালমাটির বীরভূম জেলায় রয়েছে মোট ৫টি সতীপীঠ। এই সতীপীঠ ছাড়াও আছে কয়েকটি জাগ্রত কালী মন্দির, যে তালিকায় জনপ্রিয় নিরিশা মা। কথিত, এক সময়ে পঞ্চমুণ্ডির আসন রাখা থাকত মায়ের জন্য। ৩০০ বছরের পুরনো সেই রীতিনীতি মেনে আজও পূজিত হন দেবী। কালীপুজোর দিনে শুধু বীরভূম নয়, আশপাশের প্রায় সমস্ত জেলা থেকেই মানুষ ভিড় জমান এই মন্দিরে।



প্রতিমার তিনটি ভাগ পৃথকভাবে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে পূজিতা হতেন প্রায় ৩০০ বছর ধরে। কিন্তু পরবর্তীকালে অর্থাৎ দেড়শো বছর আগে জমিদার প্রথার অবসান হলে তিনটি প্রতিমাকে একত্রিত করা হয় একটি মন্দিরে এবং তখন থেকেই তিনটি প্রতিমা একটি মন্দিরেই পূজিতা হয়ে আসছেন। কালীপুজোর দিন এই তিনটি প্রতিমার পুজো দেখতে ভিড় জমান বীরভূম জেলা ও ভিন জেলার মানুষ। অন্যান্য রাজ্য থেকেও পুণ্যার্থীরা আসেন এই মায়ের দর্শন করতে। কালীপুজোর (Kali Puja) দিন প্রায় সাত থেকে আট হাজার মানুষ ভিড় জমান এই কালী পুজো দেখতে।


এছাড়াও এই কালীপুজোকে কেন্দ্র করে বসে মেলা। প্রায় সাত দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এই পুজো উপলক্ষে। কবিগান, কীর্তন ও যাত্রা ছাড়াও এখানে আরও অনুষ্ঠান হয়৷ প্রতিবছর বলি দেওয়া হয়৷ মায়ের কাছে করা মানত পূরণ হলেই ভক্তরা এসে কালীপুজোর দিন পাঁঠা বলি দেন৷ সেইমতো গতবছর আটশো পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবছরই পাঁচশোর বেশি পাঁঠা বলি দেওয়া হয় এই কালীমন্দিরে৷ মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, একবছর ১২০০ পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছিল৷ কালীপুজোর আট দিনের মাথায় মন্দির সংলগ্ন পুকুরে বিসর্জন হয় তিনটি কালী প্রতিমার।


এই মন্দির ঘিরে আছে কিছু অলৌকিক বিষয়, যা বিশেষ ভাবে নজর কাড়ে। যেমন, প্রতি বছর প্রতিমা তৈরির কারিগর বদলে গেলেও বদলায় না মায়ের মুখমণ্ডল। প্রত্যেক বছর মায়ের রূপ একই থাকে, কোনও বছরই প্রতিমার উচ্চতা ও ওজনের পরিবর্তন হয় না। নিরিশা মায়ের উপরে অটুট ভক্তি মানুষের। এই গ্রাম ও বাইরের অন্যান্য এলাকার মেয়েদের কোনও রোগ হলেই তাঁরা ছুটে যান এই নিরিশা মায়ের কাছে। তাঁদের বিশ্বাস, এখানে মানত করলেই রোগ-জ্বালা থেকে মুক্তি মেলে। এমন বহু অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী বীরভূমের এই নিরিশা মায়ের মন্দির।


Previous Post Next Post

نموذج الاتصال