স্পেশাল রিপোর্ট ওয়েব ডেস্ক, লুম্বিনী । মহাত্মা গৌতম বুদ্ধ নেপালের লুম্বিনীতে জন্মগ্রহণ করেন। বলা হয় কপিলাবস্তুর পূর্বদিকে লুম্বিনী নামে রাজবাগানে রানী একটি গাছের নীচে গৌতম বুদ্ধের জন্ম দেন।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ঐতিহাসিকবিদ, পুরাতাত্ত্বিকবিদ বিভিন্ন সময় লুম্বিনীতে খননকার্য করে ও ইতিহাস পর্যালোচনা করে গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানের সন্ধান পান।
বৌদ্ধ ধর্মে উল্লেখ পাওয়া যায় এই রাজ্যের। চিনের পর্যটক ফা-হিয়েনের মতানুসারে কপিলবস্তুর পূর্বদিকের লুম্বিনীতেই জন্ম গৌতম বুদ্ধের। তিনি রাজকার্য ছেড়ে মোক্ষের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন ও পরে সন্ন্যাসী হয়ে ফিরে আসেন।
অশোকের গ্রন্থানুসারে, কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। তার ১২ বছর পর তিনি ও তার গুরু লুম্বিনীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যে গাছের নীচে বুদ্ধের জন্ম হয়, সেখানে সম্রাট অশোক একটা স্মারক স্তম্ভ তৈরি করেন এবং শিলালিপি খোদাই করেন। অশোকের নানা গ্রন্থে লুম্বিনীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
সেএন সাইয়ের মতে, অশোকের নির্মিত স্মারকটি নীল পাথর দিয়ে ঢাকা ছিল। ফা-হিয়েন ও হিউয়েন সাং এর লেখাতেও এই স্মারক স্তম্ভ উল্লেখ পাওয়া যায়।
ইতিহাসের পাতাতে হারিয়ে যায় এই জায়গাটি। তারপর ১৮৯০ সালে নেপালের সেনাপতি খারাক শমসের জংবাহাদুর রানা তরাই অঞ্চলে একটি স্তম্ভ পাওয়া গেলে , তার খননকার্যের নির্দেশ দেন। পরীক্ষা করে জানা যায় স্তম্ভটি সম্রাট অশোকের। একটি শিলালেখে পালি ও ব্রাহ্মিণ ভাষায় পাঁচটি লাইন ও ৯০ টি শব্দ পাওয়া যায় যা প্রমাণ করে, লুম্বিনী হলো বুদ্ধদেবের জন্মস্থান।
এছাড়া ১৮৯৯ সালের খননে মায়াদেবী মন্দিরের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে এই মন্দিরের আশেপাশে খননকার্যে বৌদ্ধ মঠের নানা তথ্য উঠে আসে।
বর্তমানে লুম্বিনী ঐতিহাসিক ও বৌদ্ধ তীর্থস্থান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৫৭ সালে ইউনেস্কো লুম্বিনীকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষনা করে ।