স্পেশাল রিপোর্ট ওয়েব ডেস্ক,
লোকসভায় ‘এক দেশ এক ভোট’ বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। সঙ্গে সঙ্গে এর বিরোধিতায় সরব হন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। হট্টগোল শুরু হয় সংসদের নিম্ন কক্ষে। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিল পেশের ক্ষেত্রে ভোটাভুটি চান। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তাতে সায় দিতেই ‘এক দেশ এক ভোট’-বিল পেশের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটাভুটি শুরু হয়।
এই প্রথমবার সংসদের নয়া ভবনে ইলেকট্রনিক ভোটিং পদ্ধতিতে ভোটাভুটি হয়। তবে প্রথমবার প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে অনেকেই ঠিকমতো বটন প্রেস করতে পারেননি। ফলে দু’দফায় ভোটাভুটি হয়। দ্বিতীয় দফা শেষে দেখা যায়, ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ বিল পেশের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৬৯টি এবং বিপক্ষে পড়েছে ১৯৮টি।
এক দেশ এক ভোট পদ্ধতির বিরোধিতায় সরব কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। তাদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থীও বলে সরব বিরোধী শিবির। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেন, 'এক দেশ এক নির্বাচন কোনও নতুন ধারণা নয়। ১৯৫২ সালে প্রথমবার দেশে একইসঙ্গে সমস্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে আটটি রাজ্যের বিধানসভা ভেঙে আবারও একসঙ্গে ভোট করা হয়েছিল। এর পরের নির্বাচনেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল।’
এক দেশ, এক ভোট' বিলের খসড়া অনুযায়ী, কখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে যদি বিধানসভা বা লোকসভা ভেঙে যায়, তাহলে শুধুমাত্র মেয়াদের বাকি সময়টুকুর জন্য লোকসভা বা বিধানসভা উপনির্বাচন হবে। তারপর থেকে সমস্ত স্তরের নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তাতে বিপুল খরচে রাশ টানা যাবে বলে যুক্তি সরকারপক্ষের। আবার বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভা-লোকসভা-পুরসভা-পঞ্চায়েত ভোট একসঙ্গে হলে গণতন্ত্রের বৈচিত্র নষ্ট হবে। একেকটা নির্বাচন হয় একেকটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে। সেই সুযোগ হাতছাড়া হবে আমজনতার। ফলে এই বিল পাশ হয়ে আইন বলবৎ হলেও ২০৩৪ সালের আগে একসঙ্গে ভোটের সুযোগ নেই।
এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে বিজেপি অনেক দিন ধরেই আগ্রহী। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারেও এ বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এই বিল কার্যকর হলে সারা দেশে একসঙ্গে লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।