স্পেশাল রিপোর্ট ওয়েব ডেস্ক, আরজি কর কাণ্ডে এবার আরও বিপাকে আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁকে এবার সাসপেন্ড করল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ। বাতিল করা হল সদস্যপদও। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দুর্নীতি সহ গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ উঠে এসেছে। পাশাপাশি, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময়ও প্রাক্তন অধ্যক্ষের মধ্যে সংবেদনশীলতার অভাব ছিল বলেও অভিযোগ। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরই স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইএমএ-এর নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা সামনে আসার পরই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে আইএমএ। একটি কমিটিও গঠন করা হয়। যা ছিল ডাঃ আরভি অশোকানের নেতৃত্বাধীন। ওই কমিটির সদস্যরা নির্যাতিতার বাড়িতে যান। তাঁর মা-বাবার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন। এরপরই এই কমিটির ধারণা হয় পুরো বিষয়টিতে সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা একেবারেই সন্তোষজনক নয়। এমন নক্কারজনক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সহানুভূতির যথেষ্ট অভাব ছিল বলেও কমিটির অনুমান।
এছাড়াও সন্দীপের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পেশাকে কলঙ্কিত করার অভিযোগও উঠে আসে। শাস্তির দাবি তোলে একাধিক মহল। তাই শেষমেশ আজ, বুধবার তাঁকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় আইএমএ। সম্প্রতি তার সদস্যপদ বাতিল করে অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশনও।
শুক্রবার এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিক বৈঠক করে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানান, সন্দীপ ঘোষের ওএসডি সংক্রান্ত কোনও বিজ্ঞপ্তি বের হয়নি। তাহলে সরকারি চাকরিতে সন্দীপ ঘোষের অবস্থান কী? তাঁর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পোস্টিং বাতিল হলে, কোথায় পোস্টিং হবে? নিয়োগ বাতিলের বিজ্ঞপ্তিতে তার কোনও স্পষ্ট জবাব নেই কেন? স্বাস্থ্য সচিবের বক্তব্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সন্দীপ ঘোষ এখন ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভে’ আছেন। কলকাতা হাইকোর্ট সন্দীপ ঘোষ সম্পর্কে কী অবস্থান নেয় তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ন্যাশনালে অধ্যক্ষ না থাকলে সন্দীপ ঘোষের পদ কী হলে? এর উত্তরে স্বাস্থ্য ভবনের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছিলেন, তাঁকে ওএসডি করা হবে। সেই খবর প্রকাশ হওয়ার পর প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়। চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়, ওএসডি পদপ্রাপ্তি এক ধরনের পদোন্নতি। কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে না পাঠিয়ে কেন ওএসডি করার কথা ভাবা হচ্ছে, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে যায়। ফলে কর্মবিরতিতে ইতি টানার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে বলে উদ্বেগ বাড়ে স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের।