স্পেশাল রিপোর্ট ওয়েব ডেস্ক, দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে জুনিয়র চিকিৎসকদের। তা না করলে রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নিলে আদালতের কিছু করার থাকবে না। প্রধান বিচারপতির এমন নির্দেশের পরেই আন্দোলনকারীদের চোখে-মুখে ফুটে উঠল হতাশার ছবি। অথচ ওই নির্দেশের আগে প্রধান বিচারপতি ওয়াই এস চন্দ্রচূড় যখন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলের কাছে তরুণী চিকিৎসকের ময়না তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় চালান দেখতে চাইলেন, তখন গভীর মনোযোগ দিয়ে তা দেখতে দেখা গিয়েছিল আন্দোলনকারী আবাসিক চিকিৎসকদের।
কপিল যখন জানালেন, চালান তাঁর কাছে নেই, সেই সময়ে কয়েক জন আন্দোলকারীর চোয়াল শক্ত হতে দেখা গেল। তারও আগে যখন প্রধান বিচারপতির সামনে ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে, তখনও হাততালি পড়েছে আন্দোলন মঞ্চে। আবাসিক চিকিৎসকদের চোখে-মুখে তখনও ছিল আশার আলো।
জুনিয়র ডাক্তাররাও অনড়। জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের পাঁচ দফা দাবি আছে। তা মানা হলে তারপরই তাঁরা ভেবে দেখবেন, কর্মবিরতি তুলবেন কি না। বরং আজ তাঁরা স্বাস্থ্যভবন অভিযানে যাবেন। দুপুর ১২টায় করুণাময়ী থেকে স্বাস্থ্যভবনে যাবেন তাঁরা।
সুপ্রিম-আর্জি, কাজে ফেরার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন, মুখ্যসচিবের আবেদনের পর সোমবার জিবি মিটিং করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এরপরই ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পাঁচ দফা দাবির কথা তুলে ধরা হয়। ১. দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ২. সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড, ৩. সিপি বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ, ৪. স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, ৫. ‘থ্রেট কালচার’-বন্ধ করতে হবে।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি পরিষেবায় ছাপ ফেলছে বলে সোমবার নবান্ন থেকেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। মানুষের ভোগান্তির কথা তুলে ধরতে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, এই আন্দোলনের কারণে ৭ লক্ষ মানুষ আউটডোরে পরিষেবা পাননি। প্রায় ৭০ হাজার জনকে ইন্ডোর অ্যাডমিশনের পরিষেবা দেওয়া যায়নি। ৭ হাজারের বেশি সার্জারি করা যায়নি। দেড় হাজারের বেশি মানুষকে ক্যাথ ল্যাবে পরিষেবা দেওয়া যায়নি। পরিষেবা না পেয়ে এখনও অবধি ২৩ জন মারা গিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর বক্তব্য, “আমরা তো জুনিয়র ডাক্তার। শিক্ষানবিশ, ছাত্র। একটা সিস্টেম শুধুমাত্র যদি ছাত্রদের উপর দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে রাজ্য সরকারের কাছে প্রশ্ন এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিয়ে আদৌ কি সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব? হেল্থ রিক্রুকমেন্ট নিয়ে তো প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।” অন্যদিকে আইএমএ বেঙ্গল জানিয়েছে, কোথাও পুরোপুরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়নি।