প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে ভারতের ঝুলিতে চলে ষষ্ঠ পদক। এইবার প্রথম ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-এ কুস্তি থেকে এল পদক। আশার আলো দেখালেন অমন শেহরাওয়াত। শুক্রবার পুরুষদের ৫৭ কেজির ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ম্যাচে হরিয়ানার মল্লযোদ্ধা পুয়ের্তো রিকোর দারিয়ান তোই ক্রুজ়কে ১৩-৫ পয়েন্টে হারালেন। ভারতের ঝুলিতে এখন পাঁচটি ব্রোঞ্জ ও একটি রুপো। পদক তালিকায় ভারতের স্থান ৬৫ নম্বরে। দেখতে গেলে ভিনেশ ফোগাটের হৃদয় বিদারক খবরের পর, ভারত কুস্তিতেই পদক জিতল। যা নিঃসন্দেহে কুস্তিপ্রেমীদের কাছে দারুণ খবর।
মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি তার বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছিলেন। বছরের পর বছর ধরে মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করার পর তার মা নিজের জীবন নিয়েছিলেন। এর পরেই তার বাবাও মারা যান। মন হতাশার সাথে লড়াই করে এবং তার ব্যথা ভুলতে ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করেছিল। অনেক দিন তিনি অন্ধকার জায়গায় ছিল। কিন্তু তার কাকা সুধীর শেহরাওয়াত তাকে সামলে ছিলেন। তিনি অয়নকে কুস্তি শেখানোয় মনোনিবেশ করান। তার মনকে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করেছিলেন। তার দাদা মঙ্গেরামও তাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
অলিম্পিয়ান সুশীল কুমারের কাজের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, মন তার বাবা মারা যাওয়ার দুই বছর আগে দিল্লির ছত্রশাল স্টেডিয়ামে যোগ দিয়েছিলেন। মামার হাত ধরে এখন জীবন বদলে গেল। তার জীবনে একটা মিশন ছিল। তিনি অবিচলিত অগ্রগতি করেন, নতুন মাইলফলকগুলিতে পৌঁছাতে থাকেন এবং সংবাদপত্রের শিরোনাম হন যখন তিনি U-২৩ বিশ্ব কুস্তি প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতে প্রথম ভারতীয় হন।
অলিম্পিকের মঞ্চে এই নিয়ে টানা পদক ভারতীয় কুস্তির। ২০০৮ সাল অলিম্পিক থেকে কুস্তিতে খালি হাতে ফেরেনি ভারত। ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিকে সুশীল কুমার ব্রোঞ্জ এনেছিলেন। সেই থেকে পদকের সিলসিলা চলছে। অমন সেই ধারা বজায় রাখলেন। ম্যাচ শেষে পদকজয়ী অমন বলেন, ‘অনেক ক্লোজ ফাইট ছিল। শুরুতে সমানে সমানে ছিল। তবে পরের দিকে আমি এগিয়ে যাই। এই পদক বাবা-মা এবং পুরো দেশকে উৎসর্গ করতে চাই। এটা ভেবেই অলিম্পিকে এসেছিলাম যে ধীরে ধীরে এগোব। পদক নিয়ে ফিরতে পারব, ভেবে খুবই ভালো লাগছে।’