স্পেশাল রিপোর্ট ওয়েব ডেস্ক, আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের সপ্তাহ তিনেক হতে চলল। সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার যাওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শেষে দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়ার দাবি উঠছে সব মহলে। সেইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। বিচার চেয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে আজ, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’ নামে তথাকথিত অরাজনৈতিক সংগঠন।
নবান্ন অভিযানে শামিল হতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে নদীপথে রওনা দিলেন কয়েকশো ছাত্র-ছাত্রী। সঙ্গে অভিভাবকরাও। ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কলকাতামুখী তাঁরা। সকাল থেকে শহরের পথে কড়া নিরাপত্তা। ত্রিস্তরীয় বলয়ে ঘিরল রাজ্যের মূল প্রশাসনিক ভবন নবান্ন। কর্মীদের প্রবেশেও চলছে খুঁটিনাটি পরীক্ষা। বিভিন্ন জেলা থেকে বাসে, ট্রেনে নবান্নমুখী ছাত্রছাত্রীরা। সকাল থেকে পথেঘাটে ভিড়।
তৃণমূলের দাবি, এই কর্মসূচির পিছনে রয়েছে পদ্মশিবিরই। নবান্ন অভিযান থেকে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। বিজেপির পাল্টা দাবি, কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। তৃণমূল ছাত্রদের আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে। অভিযানের পিছনে যে গেরুয়া শিবিরের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে এক মশাল মিছিল হয়েছে। ছিলেন বিজেপির যুব মোর্চা, মহিলা মোর্চা প্রভৃতি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে তাদের নেপথ্যে বিজেপি-আরএসএস যোগ ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এই কর্মসূচির আড়ালে রাজ্যকে অশান্ত করার ছক রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। তাই পুলিশ অশান্তি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করেছে।
তবে সূত্রের খবর, নবান্ন অভিযানের জন্য জেলা থেকে লোকজন নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজেপি রাজ্য স্তর থেকে ২০টি বাস পাঠানো হচ্ছে। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘ছাত্র সমাজের ওই কর্মসূচিতে যে কেউ যেতে পারেন।’’ টিএমসিপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি বর্তমানে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি আর্য ঘোষ বলছেন, ‘‘রাম-বামের ওই যৌথ কর্মসূচির আড়ালে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কেউ ওখানে যাবেন না।’’
মিছিল থেকে নবান্ন অভিযান সফল করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি আশীর্বাদ ভৌমিক বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার ইতিহাস তৈরি হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হবে। তৃণমূলের পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করলে পরবর্তী সময়ে সারা রাজ্য স্তব্ধ হয়ে যাবে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ বলছেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে লোক খেপিয়ে গন্ডগোলের চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপি, এবিভিপি, আরএসএসের কিছু লোক হাওয়া দিচ্ছেন।’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়েছে। কারণ, সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। ছাত্র সমাজ রাস্তায় নেমেছে।’’