স্পেশাল রিপোর্ট, ডেস্ক: জানা যাচ্ছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতের এই আইন। হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি, খৃস্টান ধর্মাবলম্বী, যাঁরা ধর্মীয় অত্যাচারের কারণে ভারতে আশ্রয় নেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে এই সিএএ। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট বেজে গিয়েছে, এই প্রাক্কালে সারাদেশে সিএএ কার্যকর হয়ে গেল ১১ মার্চ সন্ধ্যা থেকে। সোমবার সিএএ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ১১ মার্চ থেকে দেশে সিএএ বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট কার্যকর হল বলে জানানো হয়েছে। সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।
এদিকে সিএএ কার্যকর হওয়ায় বঙ্গ–বিজেপি নেতারা বেজায় খুশি। কারণ এটাকে ইস্যু করে মতুয়া ভোট টানা যাবে। আর এই কারণে প্রধানমন্ত্রী ৬ মার্চ বাংলায় এসে এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি।
এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও এই আইনকেই ভাল পদক্ষেপ বলেছেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিন কেরল থেকে কলকাতায় ফেরেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সিএএ নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাজ্যপাল। তবে গোটা বিষয়টি না পড়ে পদক্ষেপ করবেন না বলে জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। এই আইন কার্যক হতেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস প্রশংসা করে বলেন, ‘আমার মনে হয়, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে ভাল পদক্ষেপ।’ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সাংসদে পাশ হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করতেই বিল এখন আইনে পরিণত হয়েছে। ২০২০ সালে আইন কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু করোনাভাইরাস শুরু হয় দেশে। তারপর সাতবার বিধি তৈরির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তাই বাস্তবে এই আইন কার্যকর হয়নি। অবশেষে লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশে সিএএ কার্যকর করা হল। অন্যদিকে তাঁর মতে, ‘সংসদে বিল পাশ হয়ে গিয়েছিল। এখন যেটা হচ্ছে সেটা বিধি তৈরির হওয়ার পর কার্যকরের কথা ছিল। এটাকে স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছি। সরকারের খুব ভাল পদক্ষেপ। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলার জন্য খুবই জরুরি।’ এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে সোমবার জানান, সিএএ দেখিয়ে বাংলার কোনও মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নিলে আন্দোলন হবে। তিনি বলেন, ‘ক্যা দেখিয়ে এনআরসি নিয়ে এসে এখানকার কারও নাগরিকত্ব বাতিল করা হলে আমরা চুপ থাকব না। নো এনআরসি। এনআরসি মানতেই পারি না। আর ক্যা–এর নাম করে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে এই চালাকিও আমরা করতে দেব না।’ তবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘সিএএ বিধি এখন তৈরি করা হয়েছে। তাতে প্রমাণ হয়, কেন্দ্রে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার রয়েছে। আইনের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করা উচিত নয়। আইন পাশ হয়েছে, বিধি তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেক সরকারের আইন মেনে কাজ করা উচিত। সিএএ কী সেটা না জেনেই মন্তব্য করা হচ্ছে। আমার মনে হয় আগে সিএএ কী তা পড়ুন, ভাল করে বুঝুন তারপর কথা বলুন।’