ভূস্বর্গ যেন রূপ হীন । সাদা বরফের চাদরে ঢাকা প্রকৃতির মনমুগ্ধকর দৃশ্যের দেখা নেই । চারিদিক শুস্ক । স্নোম্যান, স্কিং প্রেমীদের জন্য এক রাশ হতাশা । এমনি দৃশ্য ধরা পড়েছে প্রাকৃতিক ভূস্বর্গ কাশ্মীরের গুলমার্গে। এই বছর শীতের লুকোচুরি খেলাতে বেশ খানিকটা প্রভাব পড়েছে মানুষের উপর। দেশ-বিদেশ থেকে বহু পর্যটক এই সময় কাশ্মীর উপভোগ করতে আসেন। গুলমার্গ যা উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ড নামে সকল পর্যটকের কাছে জনপ্রিয় তা আজ জনমানব শূন্য । জানুয়ারি মাসে এইরকম দৃশ্য কাশ্মীর খুব কমই দেখা যায়। এমনকি মানালি এবং হিমাচল প্রদেশের বেশ কিছু জায়গায় বরফের দেখা মেলেনি। এরফলে পর্যটকদের মধ্যে জমছে একরাশ হতাশা আর বাড়ছে জলবায়ু নিয়ে উদ্বেগ ।
গুলমার্গ, মানালি, হিমাচল প্রদেশ নামগুলি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে তুষারে ঢাকা পাহাড়, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর। কিন্তু এই বছরে প্রথম থেকেই শীতের দাপট সেই ভাবে নেই। কাশ্মীর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত বৃষ্টি ও তুষারপাতের কোন সম্ভাবনা নেই। গুলমার্গে তুষারপাত না হলেও বহু পর্যটক আসছেন। অপর দিকে স্থানীয় পর্যটন শিল্প ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। স্কিং, গ্লাইডিং, হোটেল রেস্তোরা ব্যবসা পরিমাণ অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। গুলমার্গের এক পর্যটন বলেছেন, কোথাও বরফ নেই পুরো। উপত্যকায় ফাঁকা, পাহাড়ের ঢাল শুকনো। এই পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগের।
কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশ সহ মানালি, হিমাচলে তুষারপাত না হওয়া বড়ো কারণ “এল নিনো”। বেশিরভাগ এল নিনো বছরে বরফ পড়ে না। এর আগে ২০১৪, ২০১৫, ২০১৮ ২০২২ সালে একই ছবি দেখা গেছে। নভেম্বর মাস থেকেই এল নিনোর প্রভাবে শীত ক্রমাগত বাঁধা পেয়েছে। আবহাওয়াবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তন, সমুদ্রের উষ্ণ স্রোত বৃদ্ধির কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন। তবে প্রতিবছর এল নিনোর প্রভাব থাকে না। ফলে আশা করা যায় কাশ্মীর তার সৌন্দর্য ফিরে পাবে।